ওয়ালি মাহমুদ। পুরো নাম মোহাম্মদ ওয়ালিউর রহমান মাহমুদ। বাংলাদেশের সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার জলঢুপ পাতন গ্রামে ১লা আগস্ট ১৯৭২ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু করেন পাতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। একই বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি শেষ করে লাউতা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক এবং সিলেট এমসি কলেজে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত লেখাপড়া করেন।
১৯৮৬ সালে দেয়াল পত্রিকার মাধ্যমে প্রথম লেখালেখির হাতে খড়ি। এ সময়ের বাংলা কবিতার সঙ্গে যার ঘর-সংসার। কাব্যের জগতে কখনো গদ্যের তীরে হাঁটতে হাঁটতে কুশিয়ারা, কখনোবা পদ্যের তীর ঘেঁষে সুনাই অথবা বিলেতের টেমস অবধি। অব্যয়ী বিবর্তনা দিয়ে কাজ করেন। কবিতার ঘর বানাতে বিশুদ্ধ বাংলার গাঁথনি’দি শুরু করেও কাঁচামাল হিসেবে কোন সময় নাগরী, আবার কোন সময় হোকনিয়ার পাশ দিয়ে তিস্রী বিলের ফুলেল বসন্তও বাদ যায়নি। প্রকৃতি, নদী ও নারীর সমষ্টি তার লেখায় মূর্ত। ভালবাসার বিমূর্ত আবেগকে তিনি কাব্যের চয়নিক শব্দ-কল্প, উপমার বোধানুকূল প্রয়োগ করেছেন বিভিন্নভাবে।
তাঁর চিন্তা চেতনা ও রাজনীতির দর্শন-একই সূত্রে গাঁথা। বর্ণময় জীবনের আত্মমগ্ন- কবি ওয়ালি মাহমুদ। কাব্যের সংব্যান খোলার আশায়-তিনি কখনো বৈরাগী হয়ে প্রেম তীর্থ ভ্রমণে, কখনো উদ্দাম তারুণ্যে ভালোবাসার অসীম আকাশ ছুঁয়েছেন বিচিত্র আঙ্গিকে। অন্যদিকে অনুভূতির তীব্র দাহনের উপস্থিতি তার কবিতায় লক্ষণীয়। নিয়মমাফিক বৃত্তের বাইরে স্বতন্ত্র অবস্থানের পুনঃপুনঃ প্রচেষ্টায় মলাটবন্দি কাব্যের পঙ্ক্তিমালার সযত্ন সৃষ্টি, কবিতাকে চিনিয়ে দেয় গভীরভাবে।
তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ও গবেষণা এবং সম্পাদিত লিটলম্যাগ যথাক্রমে:
(ক) কাব্যগ্রন্থ:
ভালোবাসার পোয়াতি (কোলাজ, ১৯৯৯), যৈবতী শোন (কোলাজ, ১৯৯৯), একটি দীর্ঘশ্বাসের মৃত্যু DEATH OF A SIGH (উৎস, ২০০১), আমি এক উত্তরপুরুষ ও I AM THE DESCENDANT (উৎস, ২০০২), নির্বাসনে, নির্বাচিত দ্রোহ (ম্যাগনাম ওপাস, ২০০৪), ১২৩৭ দাগ (এডিটর’স ইংল্যান্ড, ২০১৪), হৃদয়ের ভাষা Language of the heart (মেঘ, ২০২২), নিষিক্ত পরত Fertilised Layer (মেঘ, ২০২২)।
(খ) ডায়াস্পোরা গবেষণা:
দ্রোহী কথাসাহিত্যিক আব্দুর রউফ চৌধুরীর সাহিত্যসম্ভার (এডিটর’স ইংল্যান্ড, ২০১৩) ।
(গ) সম্পাদিত লিটলম্যাগ:
কবিয়াল (সম্পাদিত, ১৯৯২), শিকড় (সম্পাদিত, ১৯৯৪) ও ইংল্যান্ড এবং বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত লোকন লিটলম্যাগ সম্পাদনা করেন।